কালিহাতীতে ধর্মীয় চাপ ও নিরাপত্তা সংকটে বন্ধ ‘তান্ডব’ সিনেমার প্রদর্শনী ক্ষতিগ্রস্ত আয়োজকরা বলছেন- ৯ লাখ টাকারও বেশি লোকসান
আপডেট সময় :
২০২৫-০৬-১১ ২৩:০৫:০৩
কালিহাতীতে ধর্মীয় চাপ ও নিরাপত্তা সংকটে বন্ধ ‘তান্ডব’ সিনেমার প্রদর্শনী ক্ষতিগ্রস্ত আয়োজকরা বলছেন- ৯ লাখ টাকারও বেশি লোকসান
শাহ আলম, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি: টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে ধর্মীয় মহলের প্রতিবাদ ও নিরাপত্তা ঘাটতির কারণে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত বাংলা সিনেমা ‘তান্ডব’-এর প্রদর্শনী। মঙ্গলবার (১০ জুন) দুপুরে আউলিয়াবাদ এলাকার জেলা পরিষদের মালিকানাধীন কমিউনিটি সেন্টার কাম মাল্টিপারপাস হলে প্রদর্শনী বন্ধের ঘোষণা আসে।
এর আগে, গত শুক্রবার বাদ আছর পারকি ইউনিয়ন ওলামা পরিষদের নেতৃবৃন্দ বিক্ষোভ মিছিল করেন এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বরাবর সিনেমা বন্ধের দাবিতে লিখিত আবেদন জমা দেন।
উল্লেখ্য, ঈদের দিন থেকে দেশব্যাপী ১৩২টি স্থানে একযোগে ‘তান্ডব’ ছবির প্রদর্শনী শুরু হয়। কালিহাতীতে স্থানীয় উদ্যোক্তা কামরুজ্জামান সাইফুল ও সাজু মেহেদী এক মাসের জন্য জেলা পরিষদের মালিকানাধীন হলটি ভাড়া নেন। যদিও প্রাথমিকভাবে ১০ দিনের ভাড়া পরিশোধ করা হয়েছিল।
ধর্মীয় নেতাদের বক্তব্য: বিক্ষোভকারীদের পক্ষে মাওলানা আবদুল্লাহ বলেন, এই ধরনের সিনেমা প্রদর্শনের কারণে মসজিদ, মাদ্রাসা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিবেশ বিঘ্নিত হতে পারে। পাশাপাশি সমাজে অসামাজিক কর্মকাণ্ড বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
আয়োজকদের ক্ষোভ ও ক্ষতির হিসাব: প্রদর্শনীর অন্যতম আয়োজক সাজু মেহেদী বলেন, আমরা এসি সার্ভিসিং, টিকিট প্রিন্টিং, স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগসহ নানা প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে প্রায় ৯ লাখ টাকার মতো। কিন্তু পোস্টার লাগাতে বাধা, মাইকিং বন্ধ করে দেওয়া ও ধর্মীয় হুমকির কারণে আমরা মাত্র আড়াই দিন সিনেমাটি চালাতে পেরেছি।
অন্য উদ্যোক্তা কামরুজ্জামান সাইফুল বলেন, ধর্মীয় নেতাদের চাপ ও হুমকির কারণে নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হয়। এ কারণে হল বন্ধ করতে বাধ্য হই। আমাদের ক্ষতি যেভাবে হয়েছে, ভবিষ্যতে যেন অন্য কেউ এমন ক্ষতির মুখে না পড়ে।
প্রশাসনের বক্তব্য: কালিহাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকির হোসেন বলেন, এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার আমার নেই।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. খায়রুল ইসলাম জানান, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত এবং আবেদন পেয়েছেন। তবে বর্তমানে ছুটিতে রয়েছেন বলে জানান।
জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনের ভিত্তিতে হলটি ভাড়া দেওয়া হয়েছিল। শর্ত ছিল, আইনশৃঙ্খলার অবনতি হলে প্রদর্শনী বন্ধ করতে হবে। পরবর্তী পরিস্থিতি সম্পর্কে আমি এখনও বিস্তারিত জানি না।
সংস্কৃতি ও বিনোদনের ওপর চাপ: এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয়ভাবে সাংস্কৃতিক উদ্যোগ ও স্বাধীন বিনোদন পরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আয়োজকরা বলছেন, প্রশাসনিক সহায়তা ও ধর্মীয় সহনশীলতা থাকলে গ্রামাঞ্চলেও সুস্থ বিনোদনের সুযোগ তৈরি করা সম্ভব।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Alo News Admin
কমেন্ট বক্স